
দেশে এখন নির্বাচন হলে কোন দলকে ভোট দেবেন– এমন প্রশ্ন রেখে একটি জরিপ চালানো হয়েছে সম্প্রতি। ফলাফলে দেখা গেছে, ভোট কাকে দেবেন, সে সিদ্ধান্ত এখনও নেননি ৩৮ শতাংশ মানুষ। বাকি মানুষের মধ্যে বিএনপিকে ১৬ শতাংশ, জামায়েতে ইসলামিকে ১১ শতাংশ, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে ৯ শতাংশ, অন্য ইসলামি দলগুলোকে ৩ শতাংশ এবং জাতীয় পার্টিকে ১ শতাংশ মানুষ ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন।
গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা রাজনৈতিক দল গঠন করলে ৪০ শতাংশ মানুষ তাদের ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন। এর মধ্যে ৩৯ শতাংশ পুরুষ, ৪৪ শতাংশ নারী রয়েছেন। আর নির্বাচনে কাউকে ভোট দেবেন না ৪৪ শতাংশ মানুষ, যাদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ পুরুষ, ৩৬ শতাংশ নারী।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) প্রকাশিত ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) ‘পালস সার্ভের’ দ্বিতীয় ধাপের জরিপের ফলাফলে এমনটাই উঠে এসেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অক্টোবরে ‘পালস সার্ভে দ্বিতীয় ধাপ: অক্টোবর ২০২৪’ জরিপ পরিচালিত হয়।
জরিপের ফল বলছে, ৫৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বিশ্বাস করেন, রাজনৈতিকভাবে সঠিক পথে এগুচ্ছে বাংলাদেশ। আর দেশ ভুল পথে যাচ্ছে মনে করেন ৩৪ শতাংশ।
এর আগে গত আগস্টে পালস সার্ভের প্রথম ধাপে অংশ নেওয়া ৭১ শতাংশ মানুষ দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী ছিলেন, হতাশা প্রকাশ করেন ১২ শতাংশ মানুষ।
জরিপে জানতে চাওয়া হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের নানা কাজের প্রচেষ্টা কেমন, তাতে ১০০ নম্বরের মধ্যে কত দেবেন—এমন প্রশ্নে ৪০ শতাংশ মানুষ সরকারকে ৮১ থেকে ১০০ নম্বর দিয়েছেন। ৬১ থেকে ৮০ নম্বর দিয়েছেন ২১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৬০ নম্বর দিয়েছেন ১৯ শতাংশ আর ২১ থেকে ৪০ নম্বর দিয়েছেন ৭ শতাংশ মানুষ। সরকারকে শূন্য থেকে ২০ নম্বর দিয়েছেন ১৩ শতাংশ মানুষ।
অবশ্য গত আগস্টে সরকারকে ৮১ থেকে ১০০ নম্বর দিয়েছিলেন ৪৮ শতাংশ মানুষ। সেই হিসাব দেখলে বোঝা যায়, সরকারের প্রচেষ্টায় সবচেয়ে আস্থাশীল মানুষের সংখ্যা আগের তুলনায় ৮ শতাংশ কমেছে।
রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশে (পিআইবি) এক অনুষ্ঠানে জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ: মানুষ কী ভাবছে’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন বিআইজিডির গবেষণা সহযোগী শেখ আরমান তামিম। পরে ফলাফল নিয়ে একটি গোলটেবিল অনুষ্ঠিত হয়।