
ভারতীয় ও ইউরেশিয় প্লেটের সংঘর্ষে পৃথিবীর সুউচ্চ পর্বতমালা (হিমালয়) তৈরি হলেও এখনও ওই দুই প্লেটের সংঘর্ষ চলছে। ফলে আজও বাড়ছে হিমালয় পর্বত আর দুই ভাগ হচ্ছে ভারতীয় টেকটনিক প্লেট।
গত ডিসেম্বরে যক্তরাষ্ট্রে জিও ফিজিক্যাল কনফারেন্সে ভূতাত্ত্বিকরা চাঞ্চল্যকর এমন আবিষ্কারের থিওরি উপস্থাপন করেন বলে দ্য ব্রাইটার সাইডের এক প্রতিবেদনে বলা হয় সম্প্রতি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, তিব্বতের নীচে ভারতীয় প্লেটে একটা ফাটল ধরেছে। দুই ভাগ হওয়া প্লেটের একটি অংশ ঢুকে গেছে ইউরোশিয়ান প্লেটের নীচে আর অন্য অংশটি ঢুকে গেছে আর্থ ম্যান্টেলের মধ্যে।
তারা জানান, এই মুহূর্তে ভারতীয় টেকটনিক প্লেট ‘ডিলেমিনেশন’ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে চলায় গভীর নিম্নাংশটি অগভীর ঊর্ধ্বাংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। ইউরেশিয়ান প্লেটের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির ফলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পৃথিবীর গভীরে খুব জটিল চলনের ফলে এমন বিচ্ছিন্নতা তৈরি হওয়া খুব সহজ পদ্ধতি নয়।
২০২৩ সালে দক্ষিণ তিব্বতের ভূকম্প সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও পরীক্ষা করতে গিয়ে ভারতীয় টেকটনিক প্লেটের উত্তরাংশ নিয়ে গবেষণা করেন এবং প্লেটের বিচিত্রময় আচরণ লক্ষ্য করেন চীনের ওসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা।
চীনা ভূতত্ত্ববিদ লিন লিউয়ের নেতৃত্বে গবেষক দল জানায়, সেই পরীক্ষায় পরিষ্কার দেখা গেছে, তিব্বতের নীচে একটি ফাটল শুরু হওয়ায় সেখানে থাকা ভারতীয় টেকটনিক প্লেট দুভাগ হয়ে যাচ্ছে। কোনও টেকটনিক প্লেট এভাবে ভেঙে যেতে পারে, সেটি বিজ্ঞানীরা এতদিন ভাবতেই পারেননি।
নতুন থিওরি বলছে, ভারতের অনেক অংশ অবিচ্ছিন্ন থাকলেও ১০০ কিলোমিটার গভীর অংশে ফাটল দেখা দিচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ফাটলের ফলে বরাবর দুই ভাগে ভেঙে যেতে পারে দেশটি! এর প্রভাব পড়বে হিমালয়ের উপরও।
ইউট্রেচ্ট ইউনিভার্সিটির ভূ-গতিবিদ্যাবিদ ডুয়ে ভ্যান হিন্সবার্গেন বলেন, মহাদেশগুলো এইভাবে আচরণ করতে পারে, সেটি আমরা জানতামই না। এটি পৃথিবী বিজ্ঞানের জন্য বেশ মৌলিক একটি বিষয়। যুগান্তকারী এই অধ্যয়ন হিমালয়ের গঠন সম্পর্কে বুঝতে এবং এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি মূল্যায়নে অবদান রাখতে পারে।