
তোমরা যারা আজ জানো না,
বুঝতে পারছো না, কি হলো বা কি হচ্ছে।
তোমাদের জন্য লিখে রেখে যাচ্ছি এক নির্মম দিনের গল্প।
হ্যাঁ, এটা জুলাই পনেরোর গল্প।
জানবে, সেদিন এই মাটি মানুষের সংবিধান রক্ষার লড়াইয়ে,
অপমানের জবাব দেয়ার লড়াইয়ে নেমেছিল যারা,
তাঁদের ওপর হামলে পড়েছিল হায়নার দল।
ওরা আমার বোনকে ছাড়েনি, যে ভাই বোনের আঁচলের তলায়
লুকিয়ে একটু বাঁচতে চেয়েছিল, তাকে বের করে মারা হয়েছে।
খুঁজে খুঁজে রক্তাক্ত করা হয়েছিল তাঁদের,
হায়েনারা ঢুকেছিল মেডিকেল কলেজে, হায়েনারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল রাজপথে
কলেজের ড্রেসও যাদের সামনে কোন বাঁধা হতে পারেনি।
জেনো, হায়নারা ধুলোয় লুটিয়েছিল জাতির জনকের নামও।
জেনো, এ দেশে এক হায়নার দল ছিল, যারা প্রতিবাদী ছাত্রের উপর
লেলিয়ে দিয়েছিল ভাড়া করে আনা কুকুরের দল।
যে টি এস সি চত্বরে চায়ে চুমুক দিচ্ছো,
সেই রাজু ভাস্কর্য হয়েছিল একদিন, প্রতিবাদের দৃঢ় কন্ঠস্বর।
জানি তোমাদের জানানো হবে অনেক ভুল,
জানি তোমাদের মনে রাখতে দেয়া হবে না এই কালো রাতের গল্প,
যদি জানতে চাও, প্রশ্ন করো শহীদুল্লাহ হলের প্রতিটি ইটকে,
প্রশ্ন করো জাহাঙ্গীরনগরের ভিসি বাংলোর চার দেয়ালকে,
ওরা বলবে তোমায়, জানাবে তোমায়,
কারা সেদিন তোমার বাবা কিংবা কাকার ওপর ইট ছুঁড়েছিল তাকে রক্তাত করবে বলে।
সেদিন জানবে জানোয়াররা ঘৃণ্য এক পরিচয় লেপন করে, রুদ্ধ করতে চেয়েছিল এ দেশের ছাত্রদের
প্রতিবাদী কন্ঠস্বর।
অধিকার চাইতে গিয়ে দেশদ্রোহী হয়েছিল তোমার বাবা, তোমার মা কিংবা খালা।
তুমি এই উত্তাল জুলাইকে মনে রাখবে, তুমি মনে রাখবে এই ক্যাম্পাসের রক্তের
দাগ, তোমার জন্য তাই লিখে রেখে গেলাম সেই রক্তাত দিন
আর বিভীষিকাময় রাতের গল্প আবু সাঈদ বা তড়ুয়ার রক্তের কালিতে।