
বই মেলা নিয়ে ১০ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন লেখক মহিউদ্দিন আহমদ। নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, বইমেলা নিয়ে কয়েকটি প্রস্তাব দিচ্ছি। এটা আমার দশ দফা। দয়া করে আমার ওপর কেউ ঝাঁপিয়ে পড়বেন না। প্রয়োজনে বিকল্প প্রস্তাব দেবেন। আলোচনা হোক। আমরা সবাই একটা সুন্দর ও নিরাপদ মেলা চাই।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪) দেয়া ওই পোস্টে ১০ দফা এ প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি।
১. বইমেলায় প্রকাশক সমিতির নেতৃস্থানীয় ভূমিকা থাকা দরকার। সমস্যা হলো, তাঁদের মধ্যে দলাদলি আছে, সিন্ডিকেটও আছে।
২. বাংলা একাডেমি আসল কাজ বাদ দিয়ে মেলা নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না। এটির আয়োজক হতে পারে জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্র। এখানে সক্ষমতার প্রশ্ন উঠবে। সেটা বড় সমস্যা নয়। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থাকে অবকাঠামো তৈরি ও ব্যাবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া যায়।
৩. স্টল বা প্যাভিলিয়ন বরাদ্দের জন্য প্রকৃত খরচের চেয়ে বেশি টাকা আদায় করে মুনাফা বা টাকা নয়ছয় করার ধান্দা বাদ দিতে হবে। অনেক প্রকাশক বই বিক্রি করে খরচের টাকা তুলতে পারেন না।
৪. মেলার স্থান ও পরিবেশ লেখক ও পাঠক বান্ধব হতে হবে। সেজন্য তাদের আড্ডা দেওয়ার বা খাওয়ার একটা সভ্য পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। খাবারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পর্যাপ্ত ভ্রাম্যমাণ টয়লেট রাখতে হবে।
৫. বখাটেদের ভীড় ঠেকাতে হবে। মেলায় যেতে টিকিটের ব্যাবস্থা থাকা দরকার। মটরবাইক নিয়ে মাস্তান ঢোকা বন্ধ করতে হবে।
৬. মেলা প্রাঙ্গণে মাইকের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। কান ঝালাপালা হয়ে যায়। নতুন বইয়ের প্রচারের জন্য বড় বোর্ড রেখে সেখানে বইয়ের প্রচ্ছদ প্রদর্শন করা যায়।
৭. মেলার সময়সীমা বাড়াতে হবে। অনেকেই আছেন, যারা দিনের বেলায় যেতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। সময়টা হতে পারে সপ্তাহজুড়ে বেলা ১১টা থেকে রাত ১০টা।
৮. বিকল্পস্থান হিসেবে সংসদ ভবনের দক্ষিণের মাঠ ব্যবহার করা যেতে পারে। আগামী কয়েকবছর সেখানে অধিবেশন বসার সম্ভাবনা দেখি না। যদি এর মধ্যে সাড়ে তিনশ ফেরেশতা নাজিল হয়ে যান, তাঁরা প্রয়োজনে জুম মিটিং করবেন।
৯. মেলা মাসজুড়ে চলুক। আমরা যারা মফস্বলি, আমাদের তাতে সুবিধা হয়। অনেকেই এক বা দু’সপ্তাহের জন্য মেলার দাবি জানান। তাঁরা প্রয়োজনে এক বা দুই সপ্তাহ পর তাঁদের স্টল গুটিয়ে নিয়ে আসবেন। কেউ বাধা দেবে না।
১০. আমাদের প্রকাশকেরা রিটেইলারদের ৪০ শতাংশ ছাড় দেন। যারা ৫০ শতাংশ ছাড়ে বই বেচেন, তারা চোরাই ব্যবসা করেন বা বইয়ে উল্টাপাল্টা দাম লিখে রাখেন। মেলায় প্রকাশকেরা যেহেতু সরাসরি বই বিক্রি করেন, তাদের উচিত মেলায় ন্যূনতম ৩৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া। পাঠক বাঁচলে প্রকাশক বাঁচবে।