
দেশের সংবিধান সরকারকে অসীম ক্ষমতা দেয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের শাসন পদ্ধতি শেখ হাসিনাকে দানব বানিয়েছে।”
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪) রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয় মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, “ভালো নির্বাচনে জনগণের নিরঙ্কুশ সমর্থন পেয়েও একটি রাজনৈতিক দল দানবে পরিণত হতে পারে। দেশের নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা, বিচার বিভাগের প্রায় শতভাগই সরকার প্রধানের হাতে থাকে।”
“সাংবিধানিক পদগুলোও সরকার প্রধানের হাতের মুঠোয়। কারো কাছেই সরকারের জবাবদিহিতা নেই। এ কারণেই বাংলাদেশের যে কোন সরকারই দানবে পরিণত হতে পারে। দেশের মানুষ আশা করছে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেবে”-যোগ করেন তিনি।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা এই ভালো নির্বাচনের আগেই সংবিধানসহ সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার চাই। আমরা চাই ভালো নির্বাচনের পর যেনো কোন সরকার আর দানব হতে না পারে।”
তিনি বলেন, “আমাদের সন্তানরা ছাত্র-জনতার গণঅভূত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে। তারা গুলির সামনে বুক পেতে স্বৈরাচার হাসিনার পতন নিশ্চিত করেছে। এতো হত্যা ও নির্যাতনের পরও আমাদের সন্তানরা আন্দোলন থেকে সরে যায়নি। আমাদের সন্তানদের আত্মত্যাগ বিফল হতে দেবো না।”
“যে লক্ষ অর্জনে ছাত্ররা জীবন দিয়েছে, সেই লক্ষ্য অর্জনে সবাইকে কাজ করতে হবে”-উল্লেখ করেন জিএম কাদের।
তিনি বলেন, “আমরা শুরু থেকেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম। আন্দোলনের শুরুতেই ৩ জুলাই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পক্ষে আমি জাতীয় সংসদে বক্তৃতা করেছি। সংসদে ও রাজপথে আমরা বলেছি, ছাত্রদের আন্দোলন অত্যন্ত যৌক্তিক।”
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “যখন সরকারের নির্দেশে ছাত্রদের ওপর গুলি চালানো হলো, আমরা তার প্রতিবাদ করেছি। জীবন দেয়া ছাত্রদের আমরা জাতির বীরমুক্তিসেনা বলে অভিহিত করেছি। সমন্বয়কদের যখন ডিবি অফিসে আটক করা হলো, আমরা তাদের মুক্তি দাবি করেছি।”
“ছাত্রদের ওপর অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ করেছি। জাতীয় পার্টির যৌথসভা করে আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়েছি। আমার নির্দেশে জাতীয় ছাত্র সমাজ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে রাজপথে ছিলো। রংপুরে আমাদের ছেলেরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়ার কারনে মামলায় হয়রানি হয়েছে। রংপুরে আমাদের নেতা-কর্মীরা গ্রেফতার হয়ে হাজতবাস করেছে”-যোগ করেন তিনি।
ভবিষ্যতেও জনগণের পক্ষে জাতীয় পার্টির অবস্থান অব্যাহত থাকবে বলে জানান জিএম কাদের।
তিনি বলেন, “রাজনীতিবিদ হিসেবে সর্বপ্রথম রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছি আমি। আবু সাঈদের পরিবারকে বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানিয়েছি। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা সব সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে ছিলো। জাতীয় পার্টি সবসময় জনগণের পক্ষের দল।”
জাতীয় পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান আকাশের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভা সঞ্চালন করেন সদস্য সচিব রাকিবুল হাসান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের, মনিরুল ইসলাম মিলন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রফিকুল আলম সেলিম, জাহিদ হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ হান্নান।