দলীয়রাজনীতি

শাসনব্যবস্থাই সরকারকে দানবে পরিণত করে

বাংলাদেশের সংবিধানে সরকার প্রধানকে অপরিসীম ক্ষমতা দেয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থাই সরকারকে দানবে পরিণত করে।”

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪) রাজধানীর বনানী জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ সব কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, “এতে ভালো নির্বাচনে জয়ী হয়ে জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দলও ক্ষমতা অপব্যবহার করে দানবে পরিণত হয়ে যায়। আমরা মনে করি, ভালো নির্বাচনের আগে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। তবেই, ভালো নির্বাচনের পর ভালো সরকার পাওয়া যাবে।”

“আমরা চাই, দেশের মালিকানা যেনো সাধারণ মানুষের হাতে থাকে। সাধারণ মানুষ যেনো ইচ্ছে অনুযায়ী তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে। সরকারের জবাবদিহিতা থাকবে সাধারণ মানুষের কাছে। সরকার যদি জনগণের ইচ্ছের বাইরে দেশ পরিচালনা করে, তাহলে পরবর্তী নির্বাচনে যেনো সাধারণ জনগণই আবারো ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার পরিবর্তন করতে পারে”-যোগ করেন তিনি।

জাতীয় পার্টি সব সময় জনগণের ইচ্ছে অনুযায়ী রাজনীতি করেছে বলে দাবি করেন দলীয় প্রধান।

তিনি বলেন, “জনগণের পক্ষে থেকেই জনগণের পক্ষে রাজনীতি করেছে জাতীয় পার্টি।”

দলটির চেয়ারম্যান বলেন, “২০১৪ সালের নির্বাচন জাতীয় পার্টি বর্জণ করেছিলো। তখন আওয়ামী লীগ সরকার পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে চিকিৎসার নামে আটক করে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশে আমি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেই।”

“তখন আমার নেতৃত্বে প্রায় ২৭০ জন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাড়ায়। আমি নিজেও ২০১৪ সালের নির্বাচন করিনি, সংসদে যাইনি। মঞ্জুর হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন চাপ দিয়ে আমাদের নেতাকে নিজস্ব রাজনীতি করতে বাঁধা দিয়েছিলো আওয়ামী লীগ”-বলেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, “২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি না গেলেও উপজেলা নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের অনেক নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো বিএনপি। আবার, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রায় সকল রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিলো। বিএনপির সংসদ সদস্যরা প্রায় চার বছর সংসদে থেকে তাদের মতামত প্রকাশ করেছে।”

২০২৪ সালের নির্বাচনে যেতে চাননি বলে দাবি করেন তিনি।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “সবাই জানে আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিলো। জাতীয় পার্টিকে দুটি ভাগ করে রেখেছিলো সরকার। একটি ঠুনকো মামলার আদেশে প্রায় চার মাস আমাকে দল পরিচালনা থেকে বিরত রেখেছে।”

“আমাদের দলের পরিচয়ে সরকার আরেকটি গ্রুপকে কাউন্সিল করতে দিয়েছিলো। আমাদের রাজনীতি ও দল পরিচালনায় অনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করেছিলো আওয়ামী লীগ”-যোগ করেন জিএম কাদের।

জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মোঃ ফরিদ উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু, এ্যাড. মমতাজ উদ্দিন, এ্যাড. ড. নুরুল আজহার শামীম, এ্যাড. আব্দুল হামিদ ভাষানী, এ্যাড. ইউসুফ আজগর, এ্যাড. আব্দুর রশীদ, এ্যাড. জিন্নাত আলী, এ্যাড. আবুল হাসনাত মাসুম, এ্যাড. শহীদুল ইসলাম মোল্লা, এ্যাড, ফিরোজ আহমেদ, এ্যাড. মোহাম্মদ আলী, এ্যাড. মোঃ মেহেদী হাসান ও এ্যাড. আবু ওহাব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button