
অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান। টেস্ট ও টি- টুয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেও এক দিনের খেলা চালিয়ে যাবেন তিনি।
ভারতের বিপক্ষে কানপুরে টেস্টে মাঠে নামার আগে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪) সংবাদ সম্মেলনে টেস্ট ও টি টুয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন এই বিশ্বসেরা টাইগার অলরাউন্ডার।
ক্যারিয়ার এখন শেষের দিকে এই ইঙ্গিত অনেক দিন আগেই দিয়ে রেখেছিলেন সাকিব। গত বছরের নভেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার সময়ই সাকিব বলেছিলেন, খুব শিগগিরই ক্যারিয়ার শেষ করতে চান তিনি। কানপুর টেস্টের আগে সেই ঘোষণা চলেই এলো।
টি-টোয়েন্টিতে নিজের শেষ ম্যাচটা এরই মধ্যে খেলে ফেলেছেন উল্লেখ করে বাংলাদেশের এই তারকা অলরাউন্ডার জানালেন, টেস্ট ক্রিকেটের বিদায়টা তিনি নেবেন ঘরের মাটি থেকেই। আসছে অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষবার বাংলাদেশের হয়ে সাদা পোশাকে দেখা যাবে সাকিব আল হাসানকে।
সাকিব আল হাসান বলেন ‘আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টি তে আমি আমার শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছি, মিরপুর টেস্টে (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে) খেলতে পারলে সেটি হবে আমার শেষ টেস্ট’।
সাকিবের কথানুযায়ী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচই ছিল ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে তার শেষ ম্যাচ। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের আর্নস ভ্যালি স্টেডিয়ামেই টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নিলেন দেশের ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই তারকা।
সাকিবের টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছিল ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে। ব্যাট হাতে ২৬ রান আর বল হাতে ১ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের সাক্ষী হয়েছিলেন সাকিব। দেশের ইতিহাসের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই ছিলেন তিনি। এরপর প্রতিনিধিত্ব করেছেন টানা নয়টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।
দেড় যুগের লম্বা ক্যারিয়ারে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ১২৯ ম্যাচে ২ হাজার ৫৫১ রান করেছেন সাকিব। ১২১ এর বেশি স্ট্রাইক রেট আর ২৩.১৮ গড় বাংলাদেশের পরিসংখ্যানে তাকে রাখবে ওপরের দিকেই। বল হাতে এই ফরম্যাটে পুরো বিশ্বে অনেকটা দিন ছিলেন শীর্ষ উইকেটশিকারী। শেষ পর্যন্ত থেমেছেন ১৪৯ উইকেট নিয়ে। প্রায় প্রতি ২১ রানে একটা করে উইকেট শিকার করেছেন তিনি। বাংলাদেশের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান (২৫৫১) ও উইকেটের (১৪৯) মালিক তিনি।
সাকিবের টেস্ট অভিষেক হয়েছিল ২০০৭ সালে ভারত সিরিজে চট্টগ্রাম টেস্টে। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ সেই ম্যাচ ড্র করেছিল। সাকিব কেবল ১ ইনিংসেই ব্যাট এবং বল করার সুযোগ পেয়েছিলেন। ব্যাট হাতে করেছিলেন ২৭ রান। বল হাতে ছিলেন উইকেটশূন্য।
সাকিব এখন পর্যন্ত খেলেছেন ৭০ টেস্ট। ব্যাট হাতে ৩৮.৩৩ গড়ে করেছেন ৪৬০০ রান। সেঞ্চুরি আছে ৫টি, অর্ধশতক ৩১টি। বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সাকিবের। বল হাতে নিয়েছেন ২৪২ উইকেট। অন্য দুই সংস্করণের মতন টেস্টেও দেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি সাকিব আল হাসান।