
যুক্তরাজ্যের দ্য লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপনের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। তবে তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে এখন অনেকটাই ভালো। তিনি সার্বক্ষণিকভাবে প্রফেসর পেট্রিক কেনেডি ও জেনিপার ক্রসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার নতুন করে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেওয়া হয়, সেসব রিপোর্ট শুক্রবার পাওয়া যাবে। সব ঠিক থাকলে এদিন সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে ছুটি হতে পারে খালেদা জিয়া। তারপর বাসায় ফিরবেন এবং বাসা থেকে নিয়মিত চিকিৎসা নিবেন।
খালেদা জিয়ার বয়স এবং জেলে থাকায় দীর্ঘদিন চিকিৎসা বঞ্চিত হওয়ার কারণে লিভার প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি বলে জানান ডা. জাহিদ হোসেন। লন্ডনের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, আরও অনেক আগে নিয়ে আসতে পারলে তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা যেতো। তিনি দ্রুত সুস্থ করা যেতেন। এখন ওষুধের মাধ্যমে চলা চিকিৎসা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে সব চিকিৎসক একমত হয়েছে এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা চলবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন এখনই সম্ভব না হওয়ায় শুক্রবার খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে তারেক রহমানের বাসায় নেওয়া হতে পারে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি কাতার আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনের উদ্দেশ্য ঢাকা ছাড়েন খালেদা জিয়া। পরদিন লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে গাড়ি চালিয়ে খালেদা জিয়াকে ‘দ্যা লন্ডন ক্লিনিকে’ নিয়ে যান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। পরে ওখানে ভর্তি করা হয় তাকে।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় কারাগারে পাঠানো হয় তাকে। তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। করোনার সময় নির্বাহী আদেশে কারাগারের বদলে নিজ বাসায় থাকার শর্তযুক্ত মুক্তি দেওয়া হলেও বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি শেখ হাসিনা সরকার।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। পরে মামলাগুলো বাতিলের দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যান তিনি।