নৌকায় ভ্রমণ শেষে তিনি এখন ধানের শীষে!

২০২১ সালে “নৌকায় ভোট না দিলে কবর দিতে দেব না” শিরোনামের একটি বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে সারা দেশে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন কক্সবাজারের উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহ আলম। সেই সময় তার পাশে ছিলেন আত্মীয় ও ব্যবসায়ী নেতা আবু ছিদ্দিক।
তৎকালীন কোটবাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আবু ছিদ্দিক সেই নির্বাচনে নৌকার পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তবে সময় বদলেছে। এখন তিনি কক্সবাজার উপজেলা বিএনপির ব্যবসা ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তার এই অবস্থান বদল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
নৌকা থেকে ধানের শীষে যাত্রা
২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত অধ্যক্ষ শাহ আলমের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় আবু ছিদ্দিক তার আত্মীয় পরিচয়ে আধিপত্য বিস্তার করেন বলে অভিযোগ। তখন নৌকা প্রতীকের জয়ে কাজ করা আবু ছিদ্দিক এখন ধানের শীষের পক্ষ নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। স্থানীয় বিএনপি নেতারা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
এক স্থানীয় বিএনপি নেতা বলেন, “রাজপথে আমরা ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি। আর সুবিধাবাদীরা এখন দলের সুসময়ে এসে ভিড় করছে। আবু ছিদ্দিক আওয়ামী লীগের মধু খেয়েছেন; এখন বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন সুবিধার আশায়।”
কোটবাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি থাকা অবস্থায় আবু ছিদ্দিকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। সমিতির সদস্যদের টাকা আত্মসাৎ, সালিশে জামানত আটকে রাখা, চাঁদাবাজি—এমন নানা বিষয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
বর্তমানে তিনি সমিতির কার্যক্রমে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, “আমাদের মেয়াদ শেষ হলে আইন অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কিন্তু আবু ছিদ্দিক রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সমিতি দখলের চেষ্টা করছেন।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইসহাক অভিযোগ করেন, আবু ছিদ্দিক তাকে অপহরণের চেষ্টা করেছিলেন। “আমরা তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। তিনি সমিতি দখল করতে চাচ্ছেন,” বলেন ইসহাক।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরোয়ার জাহান চৌধুরী বলেছেন, “আমাদের কর্মীদের কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। চাঁদাবাজি বা মানুষের ওপর জুলুম মেনে নেওয়া হবে না।”
আবু ছিদ্দিক বলেন, “আমার পরিবার বিএনপির সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত। অধ্যক্ষ শাহ আলম আমার আত্মীয় বলে নির্বাচনে পাশে ছিলাম।” তবে সমিতি দখলের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন এবং মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।