
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তিতে সই করেছে দখলদার ইসরায়েল ও স্বাধীনতাকামী হামাস। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বুধবার কাতারের রাজধানী দোহায় উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা এতে সই করেন।
যুদ্ধবিরতির চুক্তির বিষয়টি জানিয়েছেন মধ্যস্ততাকারী কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানি। এ যুদ্ধ বিরতি ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে দশটি। ফলে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার একদিন আগে থেকে কার্যকর শুরু হবে গাজায় যুদ্ধবিরতি।
যুদ্ধ বিরতিতে মধ্যস্ততাকারী আরেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এই চুক্তির আওতায় গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের পাশাপাশি উপত্যকাটিতে উভয় পক্ষের হাতে বন্দিদের মুক্তির পথ খুললো।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে স্মরণকালের ভয়াবহ অভিযান চালায় দশকের পর দশক অবরুদ্ধ গাজার ক্ষমতাসীন হামাস। এতে ১ হাজার ২১০ জন নিহত হন, বন্দি করা হয় ২৪১ ইসরায়েলিকে। এর মধ্যে ৯৪ জন এখনো গাজায় হামাসের হাতে বন্দি আছে।
ওই দিন থেকে ১৫ মাস ধরে অবিরাম গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৪৬ হাজার ৭০৭ জন, আহত হয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। পুরো গাজা এখন ধ্বংসস্তুপের পরিণত হয়েছে, বন্দি করা হয়েছে ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে।
হামাসের হাতে বিপুল সংখ্যক সেনা হতাহত হয়েছে ইসরায়েলের, সামরিক ক্ষতিও অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়েছে দেশটির। হামাসের শীর্ষ বেশ কয়েকজন নেতাসহ বর্ ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে। আর মধ্যপ্রচ্যজুড়ে উত্তেজনা তো বাড়িয়েছেই এই সংঘাত।
এর আগে একবার মাত্র সাত দিনের যুদ্ধবিরতি হলেও তারপর কয়েক দফায় যুদ্ধ বিরতির উদ্যোগ ভেস্তে যায়। উল্টো হাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত গাজার এই গণহত্যা না থামানোর ঘোষণা দিয়ে আসছে ইসরায়েল। কিন্তু সেই হামাসের সঙ্গেই শেষ পর্যন্ত চুক্তি করতে হলো নেতানিয়াহুকে। ফলে নানা সীকরণে এই চুক্তিকে হামাসের বিজয় আর ইসরায়েল পরাজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাই যুদ্ধ বিরতির খবরে ফিলিস্তিনে বিজয়উল্লাস করতে দেখাগেছে, রাস্তায় নেমে ধ্বংসস্তুপের ওপরেই বিজয় উদযাপন করছেন ফিলিস্তিনিরা।