জাতীয়রাষ্ট্র
ট্রেন্ডিং

উন্নতি না হলে বিআরটিএ বন্ধের চিন্তা, হবে মনিটরিং

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সেবা দ্রুত উন্নত না হলে সংস্থাটিকে বন্ধ করে দেওয়ার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

শনিবার (১১ জানিয়ারি) বিআরটিএ ভবনে রোড সেফটি বিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এক সভায় এক মাসের মধ্যে বিআরটিএকে সেবার উন্নয়নে একমাস সময় বেঁধে দিয়েছিলেন সড়ক উপদেষ্টা। সেই সময়সীমা শেষের দিকে হওয়ায় সাংবাদিকরা উন্নতির বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বিআরটিএকে এক মাসের সময় দেওয়া হয়েছিল। গ্রহণযোগ্যভাবে উন্নতি না হলেও কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

তিনি বলেন, বিআরটিএ’র কর্মকর্তাদের স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে— তারা যে আচরণ করছে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। তাদের এটাও বলেছি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তর বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিআরটিএ-এর কাজের যদি উন্নতি না হয়, তাহলে আমরা বিআরটিএ বন্ধ করে দেওয়ার কথা চিন্তা করব।

এ সময় উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানান, আমরা বিআরটিএ কে প্রতিনিয়ত মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখবো। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চলমান আছে, এটা আরও বাড়ানো হবে।

সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, সম্প্রতি রোড সেইফটি ফাউন্ডেশন আমাদের সড়ক দুর্ঘটনা বিষয়ে তথ্য উপাত্য দিয়েছে। গত বছর সারাদেশে ৭ হাজার ২৯৪ জন প্রাণ হারিয়েছে, আহত হয়েছে ১২ হাজারের বেশি। যা গত বছরের থেকে ১২ শতাংশ বেশি। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করার পর সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে পারিনি এর জন্য দায় নিচ্ছি।

জীবনের কোনো মূল্য হয় না মন্তব্য করে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, কিন্তু অপরাধ স্বীকারের অংশ হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করতে বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর জন্য বিআরটিএ’র কর্মকর্তাদের পরিস্কার বলে দেওয়া হয়েছে— গাড়ির ফিটনেস সনদ ও চালকের লাইসেন্স না থাকার জন্য দুর্ঘটনা ঘটলে তাদের সংশ্লিষ্ট কমকর্তাকে সরাসরি দায়ী করা হবে। এসব মৃত্যুর দায়িত্ব তাদের ওপর আসবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইভাবে সড়কের কারণে বা পুলিশের গাফিলতির কারণে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্টদের দায় নিতে হবে।

সড়ক উপদেষ্টা বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ফিটনেস ইস্যু করার প্রক্রিয়া অনেক জটিল। তাই এখন থেকে লাইসেন্স দেওয়ার ব্যবস্থাটা সহজ করা হবে এবং কার্যকরী করা হবে। এর জন্য আমরা প্রথমেই চালকদের প্রশিক্ষণের ওটর জোর দিয়েছি। আমরা চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো।

তিনি বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ফিটনেস সার্টিফিকেট রিনিউ করার ক্ষেত্রে আগে থেকে বিআরটিএ মেসেজ দিবে। তখন সেখানে জানিয়ে দেওয়া হবে কত সময়ের মধ্যে লাইসেন্স ও ফিটনেস রিনিউ করতে হবে। যদি ওই সময়ের মধ্যে লাইসেন্স রিনিউ না করা হয়, তাহলে সেটি বাতিল হয়ে যাবে।

সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেসের বিষয়ে কি কি করতে হবে, কে করবে, কিভাবে করবে, কত দিনের মধ্যে করবে, সেটি করতে কি কি প্রয়োজন হবে সেটার একটি মেট্রিক্স আমরা দাঁড় করিয়েছি। সেটা আমরা মনিটরিং করবো।

বর্তমানে সাড়ে ৪ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স আটকে আছে, যা আগামী মার্চের মধ্যে দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, তিন মাসের জন্য শিক্ষানবিশ হিসেবে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়। কিন্তু তারপর স্থায়ী লাইসেন্স নেয় না অনেকে। ফলে শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স তিন মাস পর স্থগিত থাকবে এবং স্থায়ী লাইসেন্স না নিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button