অদলীয়জাতীয়রাজনীতি
ট্রেন্ডিং

অভ্যুত্থানে সৃষ্ট জনগণের ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধের চক্রান্ত চলছে

‘জুলাই অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের উপর ভারতের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ উচ্ছেদ হবার পর ভারত বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য নানা চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম।

বুধবার (২৭ নভেম্বর ২০২৪) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এমন অভিযোগ করেন।

‘বাংলাদেশের জুলাই অভ্যুত্থানে সৃষ্ট জনগণের ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও জনগণের বৃহত্তর ঐক্য বিনষ্ট করার সাম্রাজ্যবাদী ভারত ও পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার যৌথ চক্রান্তের বিরুদ্ধে’ এ সমাবেশ আয়োজন করা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে ফয়জুল হাকিম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার উচ্ছেদ হবার পর বাংলাদেশ যখন গণতান্ত্রিক সরকার-সংবিধান ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে চলেছে সে সময় ভারতে বসে পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একের পর এক চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে।’

‘বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে ভারতের কাছে বিলিয়ে দিয়ে গত সাড়ে ১৫ বছর শেখ হাসিনা ভারতের সেবা করে এসেছিল। জুলাই অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের উপর ভারতের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ উচ্ছেদ হবার পর ভারত বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য নানা চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে’ যোগ করেন তিনি।

এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের একশ্রেণীর মতলববাজ হিন্দু নেতাদের ব্যবহার করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে দাবি করেন ফয়জুল হাকিম।

তিনি বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে সৃষ্ট জনগণের ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও জনগণের বৃহত্তর ঐক্য বিনষ্ট করার সাম্রাজ্যবাদী ভারত ও পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার যৌথ চক্রান্তের বিরুদ্ধে জনগণের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’

আগামী ১ ডিসেম্বর দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের আহবান জানান জাতীয় মুক্ত কাউন্সিল সম্পাদক।

বাঙলাদেশ লেখক শিবিরের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বলেন, ‘বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের একশ্রেণীর মতলববাজ নেতাদের মাধ্যমে তৎপরতা চালাচ্ছে এবং বাংলাদেশের সাধারণ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি অংশ তাদের দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছেন।’

‘এর বড় প্রমাণ জুলাই আগস্ট মাসে ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার নির্দেশে হাজার হাজার ছাত্র শ্রমিক জনতা নিহত হলেও এই মতলববাজ হিন্দু সংগঠনগুলোর ৮ দফা দাবির কোথাও এই গণহত্যার বিরুদ্ধে এর বিচারের দাবিতে একটি দাবিও নেই’ যোগ করেন তিনি।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন ঢাকা অঞ্চলের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আপনারা সমগ্র বাংলাদেশের অংশ। ফ্যাসিস্ট হাসিনার চক্রান্তের সাথে কিম্বা সাম্রাজ্যবাদী ভারতের ভূরাজনীতির গুটি হবেন না।’

বাংলাদেশকে চোখ রাঙানি না দিতে ভারতকে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন সহ-সভাপতি দীপা মল্লিক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ভারতকে হাত গুটাতে হবে।’

অ্যাডভোকেট মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভারত থেকে ‘জয় শ্রীরাম’ শ্লোগান আমদানি করে ইস্কন এখানে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করতে চক্রান্তে লিপ্ত। এই চক্রান্ত কার্যকর করতে ‘জয় শ্রীরাম’ শ্লোগান দিয়ে এডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গনে গতকাল হত্যা করেছে।’

চট্টগ্রামে এডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও দ্রুত বিচারের দাবী জানিয়ে জয়ভীম ছাত্র-যুব ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত দাষ বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। একে বিনষ্ট হতে দেয়া যাবেনা। জুলাই অভ্যুত্থানের অর্জন ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না।’

জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি মিতু সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button