
বিগত সাড়ে ১৫ বছরে যত মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে তা ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার নির্দেশেই হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এটা প্রমাণিত হয়েছে যে হাসিনা একজন ফ্যাসিস্ট, তিনি গণহত্যা করেছেন, মানুষের ওপর নির্যাতন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে ব্রিটিশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যানের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন নিয়ে তিনি বলেন, আমরা স্বস্তি প্রকাশ করছি, সত্য ঘটনাই উদ্ঘাটিত হয়েছে। সমস্যা হচ্ছে জাতিসংঘ যখন বলে তখন আমরা বিশ্বাস করি, যখন আমরা রাজনৈতিক দলগুলো বলি অনেকেই বিশ্বাস করতে চায় না। আমরা ধন্যবাদ জানাই জাতিসংঘ পর্যবেক্ষণ কমিটি এসেছেন, তারা রিপোর্টটা সঠিকভাবে করেছেন। সে জন্য ধন্যবাদ জানাই।
ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশেই এসব ঘটনা হয়েছে, যেসব হত্যাকাণ্ড হয়েছে তার নির্দেশেই হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যত মানবাধিকার লঙ্ঘন তার নির্দেশেই হয়েছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেওয়া, ইনস্টিটিউশনগুলো ধ্বংস করে দেয়া, এসব তার নির্দেশেই হয়েছে, এসব কথা রিপোর্টে উঠে এসেছে। এটা প্রমাণিত হয়েছে যে হাসিনা একজন ফ্যাসিস্ট, তিনি গণহত্যা করেছেন, মানুষের ওপর নির্যাতন করেছেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলপন, আমরা আজকে চাইবো ভারত সরকার তাকে বাংলাদেশ সরকারের হাতে ফেরত দেবে। তাকে এবং তার সঙ্গে যারা ছিল তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
প্রধান উপদেষ্টার আয়নাঘর পরিদর্শন বিষয়ে করা বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি এ বিষয়টাকে ভিন্নভাবে দেখি। গুম করা, হত্যা করা এটা কোনো দলের কথা আমি বলতে চাই না। এখানে বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষকে গুম করা হয়েছে। এ কথাগুলো আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি। যখন আল-জাজিরায় প্রথম রিপোর্ট করা হয় তখনো সরকার সম্পূর্ণভাবে এটিকে ডিনাই করেছে। কিন্তু প্রথম থেকেই এভাবে চলে আসছে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা বারবার বলে আসছি, জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা একটা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। গণতন্ত্রের সব নর্মস এবং কন্ডিশনের ওপর আস্থা রাখি, আমরা সেগুলো অতীতেও চর্চা করেছি। সেভাবেই মনে করি, আমরা সিদ্ধান্ত নেবো না কোন পার্টি নিষিদ্ধ হবে, কোন পার্টি কাজ করবে, কোন পার্টি কাজ করবে না। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কোন পার্টি থাকবে কি থাকবে না, কোন পার্টি নির্বাচন করবে কি করবে না।
নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে বিএনপি কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টা তো পরিষ্কার করে বলেছি, জনগণ সিদ্ধান্ত নেবেন। আমার পক্ষ থাকা না থাকা ইমমেটেরিয়াল, জনগণ সিদ্ধান্ত নেবেন।
জামায়াতে ইসলামির নির্বাচন কমিশনে আনুপাতিক হারে নির্বাচন চাওয়ার বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা আনুপাতিক হারে নির্বাচনের ঘোরবিরোধী, অত্যন্ত জোরালোভাবে বিরোধী। আনুপাতিক হারে নির্বাচনের কোনো ব্যবস্থা আমরা সমর্থন করবো না। কারণ এখানকার মানুষ এটাতে অভ্যস্ত না।
জামায়াতের স্থানীয় নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে চাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, এটার সঙ্গেও আমরা একমত নই। এগুলো রাজনৈতিক বিবেচনায় দেশকে আরও ভঙ্গুর অবস্থায় নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছু নয়। যত দ্রুত নির্বাচন হবে ততই রাজনীতি সহজ হবে। বাংলাদেশের মানুষ একটা স্থিতিশীলতার মধ্যে আসবে।