
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সময় ১২ অর্থ পাচারকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক বিফ্রিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া যেসব টাকা পাচার হয়েছে, তা ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ১২ জন অর্থ পাচারকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে তিনি জানান, ব্যাংক খাতের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস বলেছেন— ‘যারা যারা ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাদের খুব দ্রুত আইনের আহত আনতে হবে। তারা যেন আইনের আওতার বাইরে না থাকে, যেকোনোভাবে হোক আইনের আওতায় আনতে হবে। যারা এ কাজ করেছেন তারা মূলত দেশের মানুষের টাকা মেরেছেন।
শফিকুল আলম জানান, ওই বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন— ‘এস আলমের দেশে যত অ্যাসেট আছে সব অ্যাটাচ করা হয়েছে। নগদের বিরুদ্ধেও কিছু অ্যাকশন নেওয়া হয়েছে। দেশের বাইরে যেসব সম্পদ চলে গেছে সেগুলোর বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে। ব্রিটিশ একটি টিম ঢাকা ঘুরে গেছে, এখন সুইজারল্যান্ডের একটা টিমও এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র-কানাজার সঙ্গে কথা বলছি।
তিনি জানান, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা কীভাবে ফেরত আনা যায়, সে বিষয়ে বিশদ বর্ণনা দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘১২ জন যারা ব্যাংকিং সিস্টেমের লুটপাটে জড়িত, বিদেশে টাকা নিয়ে গেছে, এদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এরা কীভাবে টাকা নিয়েছে সেটা আমরা দেখছি।’
খাদ্যশস্যের দাম কমার প্রত্যাশার কথা জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে খাদ্য শস্যের দাম কমছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে। গত ৫ মাসে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশ উন্নতি হয়েছে অর্থনীতির। আগামী জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশ কমে আসবে বলে আশা করি। রমজান মাসে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়বে না।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশে কোরিয়ান ইপিজেড নির্মাণের জন্য জমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করা হয়েছে। তাদের হাতে জমির কাগজপত্র তুলে দেয়া হয়েছে। এর ফলে কোরিয়ান ব্যাপক বিনিয়োগ আসবে দেশে। পতিত সরকার কোরিয়ান ইপিজেডের জমি দখল করার পাঁয়তারা করছিল বলে বাংলাদেশের পরিবর্তে ভিয়েতনামে তাদের প্রচুর বিনিয়োগ চলে যায়। এখন সব সংকট সমাধান হয়েছে।
বিদ্যুৎ খাতে বকেয়া পরিশোধে ভর্তুকির পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬২ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রাহক পর্যায়ে বিদুতের দাম না বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমানোর মাধ্যমে ভর্তুকি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। এর ফলে চলতি বছরে ব্যয় হ্রাস হবে প্রায় ১১ হাজার ৪শ’ ৪৪ কোটি টাকা বা প্রায় ১০ শতাংশ। এ ছাড়া গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কূপ খনন করে দৈনিক ৬৪৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ২০২৮ সালের মধ্যে তা বৃদ্ধি করে ১৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।