
ছাপা গণমাধ্যমের চেয়ে মোবাইলে অনলাইন সংস্করণে খবর পড়েন ৫৯ শতাংশ মানুষ। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের এ ফল জানানো হয়।
জরিপের ফল বলছে, ৫৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মুদ্রিত খবরের কাগজ না পড়ে মোবাইল ফোনে অনলাইন সংস্করণ দেখেন। আড়াই শতাংশ কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা ট্যাবে পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ দেখেন।
এতে বলা হয়, অংশ নেওয়া ৭৩ শতাংশ মানুষ ছাপা পত্রিকা পড়েন না। ৪৬ শতাংশ মানুষ খবরের কাগজ পড়ার প্রয়োজন মনে করেন না। ৬৫ শতাংশ মানুষ টেলিভিশন দেখলেও টেলিভিশনে খবর দেখার প্রয়োজন মনে করেননা ৫৩ শতাংশের বেশি।
জরিপে অংশ নেওয়া ৮৮ শতাংশ গণমাধ্যমের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, কম্পিউটার ব্যবহার করেন ৭ শতাংশ। ৩১ শতাংশ ফেসবুকে, ইউটিউবে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ খবরে আস্থা রাখেন।
এ ছাড়া কোনো কিছু শেখা বা জ্ঞানার্জনের জন্য গণমাধ্যমের চেয়ে শিক্ষকের ওপর ভরসা বেশি, হার ৪২ শতাংশ। তবে সামগ্রিকভাবে গণমাধ্যমের ওপর আস্থা হারাননি মানুষ। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক, সরকারি ও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশে বড় অন্তরায় হিসেবে দেখা হয়।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভের প্রেক্ষিতে পাঠক, দর্শক ও শ্রোতাদের মনোভাব জানতে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের জন্য জরিপটি পরিচালনা করে বিবিএস।
গত ১-৭ জানুয়ারি ৬৪ জেলায় ৪৫ হাজার খানা (হাউসহোল্ড) থেকে ১০ বছরের বেশি বয়সীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয় জরিপে। এর মাধ্যমে গণমাধ্যমের বিস্তার, মানুষের সংবাদ গ্রহণের অভ্যাসের পরিবর্তন, গণমাধ্যমের ওপর মানুষের আস্থা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মতো বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে।
জরিপের তথ্য উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় দুর্যোগ বা সংকটে তথ্য খোঁজার জন্য টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখে মানুষ। তবে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে রেডিওর প্রাসঙ্গিকতা তলানিতে। ৯৪ শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা রেডিও শোনেন না। তাঁদের ৫৪ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা রেডিও শোনার প্রয়োজন মনে করেন না। প্রায় ৩৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী রেডিও সেটের অপ্রাপ্যতার কথা উল্লেখ করেছেন।
গণমাধ্যমকে স্বাধীন, পক্ষপাতহীন, সরকারি ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত দেখার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত হয়েছে জরিপে। তবে বেশির ভাগ উত্তরদাতাই মনে করেন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত।