
শেখ রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনের ব্যবহৃত ফ্ল্যাটটি আইল্যান্ডসে নিবন্ধিত পেডরক ভেঞ্চারস নামের একটি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে ২০০০ সালে ২ লাখ ৪৩ হাজার পাউন্ড দিয়ে কেনা হয়। এই কোম্পানির সঙ্গে নাসিম আলী ও মাসুদ আলী নামে বাংলাদেশের দুজন ব্যবসায়ীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
দ্য সানডে টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, ২০১৬ সালে ফাঁস হওয়া পানামা পেপারস এবং ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসের (আইসিআইজে) সরবরাহ করা নথিতে দেকা যায়, হারবার্টন এস এ নামের একটি অফশোর কোম্পানি কিনে নেয় পেডরক ভেঞ্চারস, পরে পেডরক ভেঞ্চারসও বন্ধ হয়ে যায়।
তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি নাসিম আলী ও মাসুদ আলী পেডরক ভেঞ্চারস প্রতিষ্ঠানটির মালিক ছিলেন। ১৯৮৩ সালে ঢাকায় নিবন্ধিত শ্যামলিমা লিমিটেড নামের একটি কোম্পানির যৌথ মালিক তারা। ওই প্রতিষ্ঠানটি বিদেশি জ্বালানি তেল কোম্পানিগুলোকে লোকবল সরবরাহের পাশাপাশি বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে।
১৯৭০ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান নাসিম আলী (৭০)। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা নথিতে তার ভাই মাসুদ আলী যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। ব্যবসায়ের অংশীদার শহীদ ইনাম চৌধুরীর সঙ্গে মিলে তারা শুধু পেডরক বা হারবার্টন এস এ নয়, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে আরও একাধিক প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এর মধ্যে একটি শ্যামলিমা লিমিটেড।
২০০৫ সালের জানুয়ারিতে নাসিম আলী ও মাসুদ আলী হারবার্টন এস এ বন্ধ করে দিতে বলেন। এর ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে সেই ফ্ল্যাটের মালিকানা মঈন গনি নামের বাংলাদেশি আইনজীবীকে উপহার হিসেবে হস্তান্তর করা হয়। তিনি শেখ হাসিনা সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, আন্তর্জাতিক একটি প্যানেলে শেখ হাসিনাই তাকে ভূমিকা রাখতে বলেছিলেন। মঈন গনির বাবা–মায়ের সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিকের মা শেখ রেহানার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ২০০৯ সালের মার্চে সেই ফ্ল্যাট টিউলিপের বোন আজমিনাকে উপহার দেন মঈন গনি। আজমিনা সিদ্দিককে ফ্ল্যাটটি হস্তান্তরের নথিতে নাসিম আলীর স্বাক্ষরের সঙ্গে পানামা পেপার্সে থাকা তার স্বাক্ষরের মিল রয়েছে।
বেশ কয়েক বছর ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। ২০১২ ও ২০১৪ সালে নিজের ঠিকানা হিসেবে ওই ফ্ল্যাট উল্লেখ করেছিলেন তিনি। টিউলিপের স্বামী ক্রিশ্চিয়ান পারসিও ২০১৬ সালে তার ঠিকানা হিসেবে ওই ফ্ল্যাটের উল্লেখ করেছিলেন। পরের বছর যুক্তরাজ্যের টিউলিপ এমপি নির্বাচিত হন। পরে তার বোন আজমিনা সিদ্দিক ওই ফ্ল্যাট ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে বিক্রি করেন।