
আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ১৫ বছরে গুম এবং জুলাই-আগস্টে গণহত্যা জড়িত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ মোট ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে জুলাই গণহত্যায় জড়িত ৭৫ জন এবং গুমে যুক্ত ২২ জন।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
তিনি জানান, শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বা লাল পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার বিষয়টি ভারতকে জানানো হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, শেখ হাসিনার জন্য ট্রাভেল পাস ইস্যু করা হয়েছে।
ই-পাসপোর্টের বিষয়ে দেশের মত বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশিরা বুধবার থেকে মোবাইলে এসএমএস পাবেন বলে জানান উপপ্রেস সচিব। তিনি বলেন, পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে এসএমএস সেবাটা প্রবাসীদের জন্য চালু হবে। এতে হয়রানি কমে আসবে বলে আমরা মনে করি। এটা ই-পাসপোর্টের জন্য। দাপ্তরিক জটিলতার কারণে প্রবাসীরা প্রায় ১ লাখ ৯৭ হাজার প্রবাসীর মেশিন রেডিবেল পাসপোর্ট (এমআরপি) ছাপানোর জন্য অপেক্ষমাণ ছিল। গত তিন সপ্তাহে ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৪৫ পাসপোর্ট বিভিন্ন দূতাবাসে পৌঁছানো হয়েছে। এগুলো অচিরেই বিতরণ শুরু হবে।
বাংলাদেশে পাসপোর্ট পাওয়া সহজ করতে বিভিন্ন উদ্যোগ চলমান আছে জানিয়ে আজাদ মজুমদার বলেন, পাসপোর্ট অফিসকে দালাল মুক্ত করতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। অনেকেই না জানার কারণে পাসপোর্ট অফিসের আশপাশের দোকান হতে অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন ফরম পূরণ করে। যে দোকানগুলো ঘিরে দালাল চক্র গড়ে উঠে। যাতে সেবা প্রার্থীদের অসুবিধা তৈরি হয়। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠিয়ে জন্য আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে এজেন্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। যারা আবেদনকারীদের সাহায্য করবে। এতে দালাল চক্র কমে আসবে বলে পাসপোর্ট অফিস মনে করে।
শিশুদের পিতামাতার জন্মসনদ অনলাইনে না থাকায় পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে না এমন প্রশ্নে—আজাদ মজুমদার বলেন, এ সমস্যার বিষয়টি পাসপোর্ট অফিসে পৌঁছানো হবে।
পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন উঠিয়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এটার মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশি জাতীয়তা যাচাই করা। কারণ অনেক সময় দেখা যায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিচ্ছে। বিষয়টি যাচাই করা হয় পুলিশ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় বাংলাদেশি নাগরিক নন এমন কেউ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করছেন। নাগরিকত্ব যাচাইয়ের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে যেতে হয়। যদিও অনেকের জন্য অস্বস্তিকর, কিছু কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়। এটার মাধ্যমে অনেকেই চাঁদাবাজির শিকার হন। সত্যিকার অর্থে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে হচ্ছে।