পুঁজিবাজারে ১৫ বছরের দুঃশাসনের প্রভাব

গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে পুঁজিবাজার, রাজনীতি এবং অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ও পরিবারের হাতের মুঠোয় ছিল। এই সময়ের মধ্যে দুর্নীতি, দুঃশাসন এবং বিচারহীনতার শিকার হয়েছে পুঁজিবাজারও। শনিবার ঢাকা ক্লাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) আয়োজিত এক আলোচনায় এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
আলোচনায় বক্তারা জানান, পুঁজিবাজারে সংস্কারের জন্য সদিচ্ছা, জ্ঞান, চাপমুক্ত পরিবেশ এবং গুণগতমানের নেতৃত্বের প্রয়োজন। তবে বর্তমান কমিশনের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্নও তোলা হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারের অস্থিরতার কারণ দুর্নীতি ও অদক্ষতা, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি এবং রাজনীতির প্রতিবিম্ব। তিনি আরও জানান, পুঁজিবাজারে সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে কেবল নীতি দিয়ে কোন ফল আসবে না।
ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি সরকারের উদাসীনতার ফল। তিনি জানান, সাবেক অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজারকে ‘ফাটকাবাজার’ হিসেবে আখ্যা দিলেও বর্তমান সরকারও সেই ধারণা থেকে বেরোতে পারছে না। তিনি সরকারের কাছে দ্রুত সংস্কারমূলক পদক্ষেপ আশা করেন।
অর্থসূচকের সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, “১৫ বছরের দুঃশাসনের ফসল এখন পুঁজিবাজারে স্পষ্ট। দেশের সম্পদ লুটের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত গিনিপিগের মতো ব্যবহার করা হয়েছে।”
পুঁজিবাজারের বর্তমান সংকট সমাধানে সাংবাদিকরা বলছেন, সঠিক নেতৃত্ব, সংস্কারের সদিচ্ছা এবং বিনিয়োগকারীদের মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। তারা আরও জানান, পুঁজিবাজারে সামাজিক মর্যাদা এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার জন্য সরকারের উচিত সুরক্ষা তহবিল প্রতিষ্ঠা করা।
এদিকে, একাধিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, পুঁজিবাজারের খারাপ অবস্থার জন্য ব্যাংকগুলোও দায়ী। তারা বলেছেন, ব্রোকারেজ হাউজের মালিকানা ব্যাংকগুলোর হাতে যাওয়ার পর থেকেই সংকট শুরু হয়েছে।