দলীয়

রাতারাতি আ’লীগ নেতারা হয়ে গেলেন ‘বিএনপি’

জামালপুরের ইসলামপুরে অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় বিএনপির বিভিন্ন পদে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার চরপুটিমারী ইউনিয়নে যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছামিউল হক রাজু ও একই ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজদুল এ বিষয়ে সমঝোতা করেন বলে জানা গেছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের হেলাল মিয়া ও আমিনুল, যাঁরা চরপুটিমারী ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যথাক্রমে অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক ছিলেন, তাঁদের ইউনিয়ন বিএনপির মৎস্যজীবী দলের সহসভাপতি পদ দেওয়া হয়েছে। একইভাবে, সাবেক যুবলীগকর্মী আল-আমিনকে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এরই মধ্যে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন।

স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর যুবদল নেতা রাজু আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন এবং তাঁরাই এলাকার নিরীহ বিএনপি নেতাকর্মীদের হুমকি ও নির্যাতনের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। এর প্রভাব এলাকায় এমনভাবে বিস্তৃত হয়েছে যে, রাজু ও কিছু অসাধু নেতার সহায়তায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুলকে মৎস্যজীবী দলের সহসভাপতি পদে বসানো হয়েছে। এমনকি এই ঘটনাগুলো স্থানীয় নেতাদের মতে, এলাকায় একপ্রকার ত্রাসের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

চরপুটিমারী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মুকুল মিয়ার দাবি, রাজু অর্থের বিনিময়ে সাবেক যুবলীগকর্মী আল-আমিনকে স্বেচ্ছাসেবক দলের উচ্চপদে নিয়ে এসেছেন এবং আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল ও আমিনুলকে নিয়ে এলাকায় ভয়ভীতি প্রদর্শনের রাজনীতি করছেন। এ ছাড়া ইউনিয়ন যুবদলের অন্য নেতাদের অভিযোগ, তাঁরা রাজুর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেই শারীরিকভাবে হেনস্তা হচ্ছেন। ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আরিফুল ইসলাম লেবু জানান, রাজু ও তাঁর সহযোগী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছেন এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে একটি বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছেন।

অন্যদিকে, অভিযুক্ত যুবদল নেতা রাজু তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, যাঁদের আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে, তাঁরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং কিছু মানুষ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন।

চরপুটিমারী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহজাহান মিয়ার বক্তব্য, যাঁদের আওয়ামী লীগ নেতা বলে উল্লেখ করা হচ্ছে, তাঁরাও পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং বর্তমানের অবস্থানের পরিবর্তন তাঁদের ব্যক্তিগত পছন্দে হয়ে থাকতে পারে।

এদিকে, চরপুটিমারী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন জানান, তাঁর ওয়ার্ডের হেলাল ও আমিনুল আগে আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তাঁদের স্থানীয় ছাত্রদলের সহায়তায় বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button