খবরাখবরস্বাস্থ্য
ট্রেন্ডিং

তারেকের বাসায় ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া

যুক্তরাজ্যের দ্য লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে শেষ পর্যন্ত লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব না হলে শুক্রবার হাসপাতাল থেকে তার ছেলে তারেক রহমানের বাসায় নেওয়া হতে পারে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) আরেকটি মেডিকেল বোর্ডের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিক পৃথক এই মেডিকেল বোর্ড কিডনি ও লিভার একসঙ্গে প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।

লন্ডন ক্লিনিকে গঠিত মেডিকেল বোর্ড, যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স হাসপাতালের ডাক্তার এবং বাংলাদেশের মেডিকেল বোর্ডের সমন্বয়ে অনলাইনে যৌথ মিটিং করে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থার পর্যালোচনা করা হয়। এতে বয়স ও স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি বিবেচনা করে লিভার ও কিডনি একসঙ্গে প্রতিস্থাপন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে একমত হয়েছেন সবাই। ফলে লিভার ও কিনডি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞদের আরেকটি মেডিকেল বোর্ড পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, একসঙ্গে দুটিই প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিলেন ডাক্তাররা। তবে বয়সে এবং শারীরিক পরিস্থিতে একসঙ্গে দুটি প্রতিস্থাপন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি নিয়ে ডাক্তাররা ভাবছেন।

আরো পড়ুন

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া মানসিকভাবে খুবই ভালো আছেন, সব সময় উৎফুল্ল। তার জ্ঞান, স্মরণশক্তি সবই আল্লাহর রহমতে ভালো আছে। দেশের সর্বশেষ আপডেট নেওয়ার চেষ্টা করেন সব সময়। তবে শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। চলাফেরায় অন্যের সহযোগিতা লাগে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন এখনই সম্ভব না হলে শুক্রবার তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে বাসায় রেখেই তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করবেন ডাক্তাররা।

এর আগে একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, এই অবস্থায় তার লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব নয়। এটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় নানা দিক পর্যালোচনা করে মেডিকেল বোর্ড বিকল্প হিসেবে লিভারের ওপর চাপ কমাতে হিউম্যান সিরাম অ্যালবুমিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি কাতার আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনের উদ্দেশ্য ঢাকা ছাড়েন খালেদা জিয়া। পরদিন লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে গাড়ি চালিয়ে খালেদা জিয়াকে ‘দ্যা লন্ডন ক্লিনিকে’ নিয়ে যান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। পরে ওখানে ভর্তি করা হয় তাকে।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় কারাগারে পাঠানো হয় তাকে। তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। করোনার সময় নির্বাহী আদেশে কারাগারের বদলে নিজ বাসায় থাকার শর্তযুক্ত মুক্তি দেওয়া হলেও বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি শেখ হাসিনা সরকার।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। পরে মামলাগুলো বাতিলের দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button