
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। এরপর সামনে এসেছে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ট দুইজনের কাছ থেকে তার ভাগ্নি, বোন রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনে ব্যয়বহুল দুটি ফ্ল্যাট বিনামূল্যে নেওয়ার বিষয়টি। এ ছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা বিতর্কের মুখে পড়ছেন তিনি।
শেখ হাসিনার সঙ্গে দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির এমপি ও মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবি জোরেশোরে উঠেছে। বিচারের মুখোমুখিও হতে যাচ্ছেন তিনি। এমতাবস্থায় টিউলিপ পদত্যাগে বাধ্য হলে তার জায়গায় নতুন কাউকে দেওয়ার চিন্তা করছে লেবার পার্টি।
এ খবর দিয়ে দ্য টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমারের জ্যেষ্ঠ মিত্ররা জানিয়েছেন, টিউলিপের বিকল্প বিবেচনা করা হচ্ছে। পদত্যাগ করতে বাধ্য হলে তার স্থলাভিষিক্ত প্রার্থী হিসেবে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।
তারা বলছেন, গত সোমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর নীতিশাস্ত্র পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার কাছে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চেয়ে আবেদন করেছেন টিউলিপ। এর আগেই তার বিকল্প প্রার্থীদের সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়েছে।
অবশ্য স্টারমার বলছেন, টিউলিপের ওপর তার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র টিউলিপকে পদ থেকে সরিয়ে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি ‘অসত্য’ বলে দাবি করেছেন।
তবে টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, তারা স্টারমারের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিকে আনুষ্ঠানিকভাবে টিউলিপের বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। এই তালিকায় দুই মন্ত্রীর সহকারী অ্যালিস্টার স্ট্রাথার্ন ও ইমোজেন ওয়াকার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সংসদীয় ব্যক্তিগত সচিব ক্যালাম অ্যান্ডারসন, পরিবেশ বিভাগের কণিক্ষ নারায়ণ, জোশ সাইমনস ও র্যাচেল ব্লেক, অ্যাটর্নি জেনারেল লুসি রিগবি ও অর্থনীতিবিদ টর্স্টেন বেলসহ কয়েকজনের নাম রয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশেও টিউলিপসহ শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নথি তলব করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অর্থায়নে হওয়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের তদন্ত করছে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই অর্থ কেলেঙ্কারিতে টিউলিপের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।