
বরিশালে চরমোনাই পীরের দরবারে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াতে ইসলামির আমির ডা. শফিকুর রহমান। পরে চরমোনাই পীরের দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন তিনি।
মঙ্গলবারের (২১ জানুয়ারি) বিরল এ ঘটনা পরিবর্তিত পরিস্থিতে জামায়াতে ইসলামি ও ইসলামী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের দূরত্ব ঘোচার আভাস মিললো।
জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকালে জামায়াতে ইসলামির কর্মী সম্মেলনে যোগ দিতে বরিশাল গিয়েছিলেন দলটির আমির শফিকুর রহমান। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চরমোনাই পীরের দরবারে যান এবং মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। এ সময় রাজনৈতিক নানা বিষয়ে কথা বলেন তারা।
পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন দুই দলের আমির। এ সময় ইসলামী দলগুলোর ঐক্য বা জোট গঠনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে ঐক্যের জন্য জনগণের কাছে দোয়া চেয়ে তারা বলেন, ইসলামী দলগুলো ভোটকেন্দ্রে একটি বাক্স পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জামায়াত আমির শফিকুর রহমান বলেন, আমরা ইসলামি দলগুলোর মধ্যে ঐক্য দেখতে চাই। ঐক্যবদ্ধ শক্তি দিয়ে আর কোনো প্রহসনের নির্বাচন হতে দেব না আমরা। তাই যথাযথ সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষে নির্বাচন দিতে হবে।
দেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে ৯১ শতাংশ মুসলমান পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাকি ৯ শতাংশের মধ্যে কিছু ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ আছেন। সব মিলিয়ে এই বাংলাদেশ আমাদের। আমাদের মিলনমেলা আল্লাহর জন্য, এটি রাজনীতির মাঠেও থাকবে। আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। জনগণ চায়, নির্বাচনের সব কেন্দ্রে ইসলামি দলগুলোর একটি বাক্স থাকুক।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসলামি আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ভোটকেন্দ্রে ইসলামের পক্ষে একটি বাক্স পাঠানোর প্রচেষ্টা আগেও ছিল, এখনো চলছে। বিভিন্ন কৌশলে গত ৫৩ বছর ইসলামি দলগুলোকে দূরে রাখা হয়েছে। ৫ আগস্ট নতুন স্বাধীনতার মাধ্যমে ইসলামি পক্ষের জন্য একটি ভালো ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। আমরা সময়োপযোগী বিচার করতে না পারলে এটি আমাদের জন্য অকল্যাণকর হতে পারে।
ইসলামী যুব আন্দোলনের বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি এইচ এম সানাউল্লাহ বলেন, রাজনীতিতে দল দুটি পরস্পরবিরোধী থাকলেও এখন অনেক বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করছে। ফলে এটা দুই দলের ঐক্যের সূচনা পর্ব বলা যায়। জামায়াতের কোনো আমির চরমোনাই পীরের দরবারে আসা, দলীয় প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম।